হাম্মাম (আব্বাসীয় যুগের সমাজ ব্যাবস্থা)
ইসলামে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নামাজের অন্যতম শর্ত হচ্ছে শারীরিক পবিত্রতা। এজন্য মুসলমানরা শুরু থেকেই এ বিষয়ে সতর্ক ছিলেন। তারা প্রচুর হাম্মাম বা স্নানাগার প্রতিষ্ঠা করে, যা জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত ছিল। এসব স্নানাগারে লোকজন গোসল করত। খতিব বাগদাদির বর্ণনামতে, খলিফা আল মুকতাদিরের শাসনামলে (৯০৮-৯৩২) বাগদাদে ২৭ হাজার স্নানাগার ছিল। পরে তা ৬০ হাজারে উন্নীত হয়। এই সংখ্যায় কিছুটা অতিরঞ্জন থাকা অস্বাভাবিক নয়, তবে ইতিহাসের অন্যান্য সূত্র একত্র করলে দেখা যায় সে সময় মুসলমানরা প্রচুর পরিমাণে স্নানাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
![]() |
Sample image: Hammam |
ঐতিহাসিক ইয়াকুবির বর্ণনামতে বাগদাদ প্রতিষ্ঠার পর শহরে ১০ হাজার স্নানাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়। ইবনে বতুতা ১৩২৭ খ্রিষ্টাব্দে বাগদাদ এসেছিলেন। তার হিসাবমতে তখন বাগদাদের প্রতি ১৩টি বাড়ি পরপর একটি করে স্নানাগার ছিল। এসব স্নানাগারে থাকত ঠান্ডা ও গরম পানির ব্যবস্থা। স্নানাগারে থাকত কয়েকটি কক্ষ। মেঝে হতো মোজাইকের, দেয়াল হতো মার্বেল পাথরের। ভেতরে একটি বড় হাউজ থাকত, যেখান থেকে পানি তুলে লোকজন গোসল করত। হাউজের পাশে থাকত বাষ্পশক্তির সাহায্যে পানি গরম করার ব্যবস্থা। স্নানাগারে থাকত সুগন্ধিদ্রব্য। গোসলের পর লোকজন শরীরে মেখে নিতেন এসব সুগন্ধি।