ইমাম মালিক রহিমাহুল্লাহ।

আনাস ইবনে মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) নামে রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন বিখ্যাত সাহাবী ছিলেন। তিনি ইন্তেকাল করেন ৯৩ হিজরীতে। ঠিক একই বছর জন্মগ্রহণ করেন প্রতিষ্ঠিত চার মাজহাবের দ্বিতীয় ইমাম, ইমাম মালিক (রাহিমাহুল্লাহ)। ইমাম মালিকের (রাহি:) পুরো নাম ছিলো মালিক ইবনে আনাস।

প্রতীকী চিত্রঃ গোধুলি 
তুমি কবুতর নিয়ে মেতে আছো আর কবুতরগুলো তোমাকে রসাতলে নিয়ে যাচ্ছে! [তারতিবুল মাদারিক, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৮]
যাও বাবা, রাবিআতুর রায়ের সাথে ছায়ার মতো লেগে থাকবে। ইলমশেখার  আগে তাঁর কাছ থেকে আদব-আখলাক শিখবে। [আত-তামহিদ, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪]

ছোটোবেলায় ইমাম মালিক (রাহি:) কবুতর পালতে পছন্দ করছেন। কবুতরগুলোর পেছনে বেশিরভাগ সময় ব্যয় করতেন। যার ফলে জ্ঞানার্জনে সময় ব্যয় করতে পারতেন না। একদিন তাঁর বাবা তাঁকে একটা মাসআলা জিজ্ঞেস করেন, কিন্তু তিনি সেটার সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। সঠিক উত্তর দেন তাঁর ভাই নাযর ইবনে আনাস।

ইমাম মালিকের (রাহি:) বাবা তাঁকে তিরস্কার করে বললেন:

বাবার তিরস্কার তিনি সিরিয়াসলি নেন। সংকল্প করেন আমি পড়ালেখায় মনোযোগী হবো। কিন্তু কার কাছে গিয়ে পড়বেন? তাঁর মা আলিয়া বিনতু শারিক তাঁকে পথ বলে দেন। মা চাইলেন ছেলেটা ইলম শেখার আগে আদব-কায়দা শিখুক। তিনি বললেন:

বাবার তিরস্কারে জেদ ধরে ইমাম মালিক (রাহি:) লেখাপড়ায় নিজেকে এতোটাই আত্মনিয়োগ করেন যে, অহেতুক সময় অপচয় বাদ দিয়ে দেন। আড্ডা দেওয়া, খেলায় যাওয়া বাদ দেন, এমনকি মানুষের সাথে আগের মতো মেলামেশাও বন্ধ করে দেন। তাঁর বোন এতে খুব আশ্চার্যান্বিত হোন। তিনি মাকে জিজ্ঞেস করেন, “মা, ভাইয়াকে কারো সাথে মিশতে দেখি না। সারাদিন এ6কা একা থাকেন। ভাইয়ার কী হয়েছে?” আলিয়া বিনতু শারিক মেয়েকে বললেন, “মা আমার, তোমার ভাইয়া এভাবে হাদীস মুখস্ত করেন।” [তারতিবুল মাদারিক, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৩১]

প্রতিষ্ঠিত চার মাজহাবের তৃতীয় ইমাম, ইমাম আশ-শাফে’ঈ (রাহি:) ছিলেন ইমাম মালিকের (রাহি:) ছাত্র। ইমাম আশ-শাফে’ঈ তাঁর শিক্ষক সম্পর্কে মন্তব্য করেন:

“হাদীসের ক্ষেত্রে ইমাম মালিক তারকাতুল্য। তারকা দেখে যেমন পথ চেনা যায়, তেমনি তাঁর মতামতের আলোকে হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধি যাচাই করা যায়। তাবেঈদের পর তিনি সৃষ্টিকুলের জন্য মহান আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত।” [তাহযিবুত তাহযিব, খণ্ড ১০, পৃষ্ঠা ৮]


Previous Post Next Post