শরীর ও কাপড় পাক করার নিয়ম

 নাপাক কাপড় পাক করার নিয়মঃ

পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ৷ ইবাদত করার আগে পবিত্রতা অর্জন করা ফরয। তাই ইসলাম সর্বদা পবিত্র থাকার নির্দেশ দিয়েছে৷ শরীরের সঙ্গে সঙ্গে পরিধানের কাপড়ও পাক-পবিত্র হতে হবে। কেননা কাপড়ে নাপাক বস্তু যদি লেগে যায়, তবে আপনার ইবাদত গ্রহণযোগ্য হবে না। কাপড়ে নাপাক বস্তু লাগাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে কাপড় ভালোভাবে পাক-পবিত্র করে নিতে হবে। 

নাপাক কাপড় পাক করার নিয়ম
নাপাক কাপড় পাক করার নিয়ম 

চলুন দেখে নেই নাপাক কাপড় পাক করার নিয়ম সমূহঃ     

১। গাঢ় নাজাছাত ( যা দেখা যায় যেমন পায়খানা, রক্ত) শরীর বা কাপড়ে লাপলে তা পাক করার নিয়ম হল নাজাছাতকে এমনভাবে ধৌত করবে যেন দাগ না থাকে। একবার বা দুইবার ধােয়ায় দাগ চলে গেলেও পাক হয়ে যাবে তবে তিনবার ধােয়া মােস্তাহাব। তিনবার ধােয়া সত্ত্বেও এবং নাজাছাত চলে গিয়ে পরিষ্কার হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও যদি কিছু দাগ বা দুর্গন্ধ থেকে যায় তাতে কোন দোষ নেই, সাবান প্রভৃতি লাগিয়ে দাগ বা দুর্গন্ধ দূর করা ওয়াজিব নয়।

২। পানির মত তরল নাজাছাত শরীর বা কাপড়ে লাগলে তা পাক করার নিয়ম হল তিনবার ধৌত করা এবং প্রত্যক বার কাপড় ভাল করে নিংড়ানাে। তৃতীয়বার খুব জোরে নিংড়াতে হবে। ভালমত না নিংড়ালে কাপড় পাক হবেনা।

৩। কাপড় বা শরীরে গাড় কিংবা তরল নাজাছাত লাগলে ধােয়া ব্যতীত অন্য কোন উপায়ে পাক করা যায় না। পানির দ্বারা ধুয়ে যেরূপ পাক করা যায় তদ্রপ পানির ন্যায় তরল এবং পাক (যেমন গােলাপ জল, রস, সিরকা প্রভৃতি) জিনিস দ্বারাও ধুয়ে পাক করা যায়। কিন্তু যেসব জিনিস তৈলাক্ত তা দ্বারা ধুলে পাক হবে না যেমন দুধ, ঘি, তেল ইত্যাদি।

৪৷ ওয়াশিং মেশিনে কাপড় ধােয়া হলে মেশিন যেহেতু নিয়ম মত কাপড় নিংড়াতে পারে না এবং নাপাক কাপড়ের সাথে থাকা পাক কাপড় একত্রে ভিজানাের কারণে পাক কাপড়ও নাপাক হয়ে যায়, তাই ধােয়ার পুর্বে বা পরে নাপাক কাপড় গুলিকে পৃথকভাবে নিয়ম মত ধুয়ে পাক করে নিতে হবে। তা না করলে যদি মেশিনেই তিনবার নিয়মমত পানি ঢেলে নিংড়িয়ে নেয়, তবুও চলবে।

৫। ধােপাগণ সাধারণতঃ অনেক কাপড় একসাথে ভিজিয়ে রাখে। এর মধ্যে কোন কাপড় নাপাক থাকলে পাক কাপড়গুলিও নাপাক হয়ে যাবে, তখন সবগুলিকে নিয়ম মত ধুয়ে পাক করা প্রয়ােজন। ধাপাগণ সেরূপ করেন কিনা? তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তাই লন্ড্রির মাধ্যমে কাপড় ধােলাই করার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়ােজন। তবে একান্তই কেউ পাক কাপড় দিলে তা নাপাক হয়েছে ধরা হবে না। পক্ষান্তরে নাপাক কাপড় দিলে তা পাকও ধরা হবে না। ড্রাই ওয়াশ-এর হুকুমও অনুরূপ। 

৬৷ দুই পাল্লা বিশিষ্ট কাপড়ের এক পাল্লা বা তুলা ভরা কাপড়ের এক দিক যদি নাপাক এবং অন্য পাল্লী বা অন্য দিক পাক হয় এমতাবস্থায় উভয় পায়া যদি একত্রে সেলাই করা হয় তাহলে পাক পাল্লার উপৰ নামায পড়া দুরস্ত হবে না। সেলাই করা না হলে নাপাক পাল্লা নীচে রেখে পাক পাল্লার উপর নামায পড়া দুরস্ত হবে; তবে শর্ত এই যে, পাক পাল্লা এত মােটা হওয়া চাই যাতে পাক পাল্লার উপর থেকে নাপার্কীর রং দেখা না যায় এবং গন্ধও টের না পাওয়া যায়।

৭৷ বিছানার এক কোণ নাপাক এবং বারকী অংশ পাক হলে পাক অংশে নামায পড়া দুরস্ত আছে।

৮৷ না ধুয়ে কাফেরদের কাপড়ে বা বিছানায় নামায পড়া মাকরূহ।

৯। তুলার গদি, তােষক অথবা লেপে যদি মল মূত্র বা অন্য কোন প্রকার নাজাছাত লাগে তাহলে পানি দ্বারা ধৌত করতে হবে। যদি নিংড়ানাে কঠিন হয় তাহলে ভাল করে তিনবার পানি প্রবাহিত করতে হবে। প্রতিবার পানি প্রবাহিত করার পর এমনভাবে রেখে দিবে যেন সমস্ত পানি ঝরে যায়, তারপর আবার পানি প্রবাহিত করবে, এভাবে তিনবার করলেই পাক হয়ে যাবে- তুলা ইত্যাদি বের করে ধৌত করার প্রয়ােজন নেই।

※ Reference: 
Book Ahkame Jindegi written by Mawlana Muhammad Hemayetuddin. Chapter 02/Ebadat/Washing clothes masalah/ 
Tag: নাপাকি দুর করার উপায়। নাপাক কাপড় পাক করার নিয়ম। শরীর ও কাপড় পাক-পবিত্র করার নিয়ম। নাপাকের মাসআলা। কাপড় কেন নাপাক হয়। নাপাক বিছানার মাসআলা। কাপড় পরিষ্কার করার নিয়ম।    

1 تعليقات

إرسال تعليق

أحدث أقدم