![]() |
প্রাচুর্যে মোড়ানো মু'মিন |
প্রাচুর্যে মোড়ানো মু'মিন : দুনিয়া যার পদচুম্বন করে
দিন যায়, সময় গড়ায়... সময়ের সাথে সাথে আমাদের চাহিদাগুলোও সমানতালে বাড়তে থাকে। একটা চাওয়া পূরণ হলো তো আরেকটা চাহিদা এসে হাজির। এভাবেই চলছে রোজকার জীবন। ছোট ছোট চাহিদাগুলো সময়ের পরিক্রমায় বড় হতে থাকে। চাই শুধু চাই.. জীবনে সুখ শান্তির স্কেল যেন ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। মনের অজান্তেই চাহিদা আর আকাঙখাগুলো লোভের গন্ডিতে কখন যে পা দিয়ে ফেলে টেরও পাইনা। কখন যে প্রবৃত্তির বশে আটকা পড়ে যাই বুঝতে পারিনা। ফলে গ্রাস করে দারিদ্র্যতা। এ দারিদ্র্যতা দেখা যায়না, বোঝা যায় না। শুধু অনুভব করা যায়।
অধিক আকাঙখা শুধু পার্থিব জীবনকেই দরিদ্র করে তোলে না। আখিরাতের জীবনের পাথেয় জোগাড় করার জন্য যে আল্লাহভীতি প্রয়োজন, আল্লাহর উপর প্রতিনিয়ত ভরসা করা প্রয়োজন, তাও হারাতে বসি.. কেননা এই আকাঙখা আমাদের দুনিয়ায় ডুবিয়ে দেয়। সেই সাথে মানুষের গোলাম বানিয়ে দেয়.. আমরা কেবল মানুষের উপর ভরসা করি। অথচ আল্লাহ আমাদের মানুষের গোলামি থেকে মুক্ত করে সৃষ্টি করেছেন। আমরা কেবল তাঁর গোলামি করব। কেবল মাত্র তাঁর!
সূরা যারিয়াতের ৫৬ নং আয়াতে এসেছে, আল্লাহ বলেন-
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
"তিনি সেই আল্লাহ্, যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং রিযিকের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।" -(সূরা রূম, আয়াতঃ ৪০)
চাহিদা, আকাঙখা, লালসা এসবই দুশ্চিন্তা বাড়ানোর উপকরণ। জীবনের প্রতিটি ছত্রে না পাওয়ার দুঃখ জুড়ে দিতে এর জুড়ি নেই। অথচ মু'মিন মানেই এসব এড়িয়ে চলে। সে জানে,
"জান্নাত দুঃখ কষ্ট ও শ্রমসাধ্য বিষয় দ্বারা ঘেরা এবং জাহান্নাম কুপ্রবৃত্তি ও লোভ-লালসা দ্বারা ঘেরা।" -সহীহ মুসলিম:২৮২২
মুমিন বান্দাদের একটি চমৎকার দিক হলো, তারা দুনিয়ায় কোনো আকাঙখা, চাহিদা ব্যতীতই সবাই ধনী। কেননা তারা লোভ নামক দারিদ্রতা থেকে মুক্ত। আর যারা লোভগ্রস্থ, হোক সে অঢেল টাকা পয়সার মালিক, প্রকৃত অর্থে সে দরিদ্র। আর লোভমুক্ত ব্যক্তি প্রকৃত অর্থে ধনী।
অঢেল সম্পদ আর অধিক আকাঙখা নিয়ে কোনোদিন মু'মিন হওয়া যায় না। কিন্তু একজন মু'মিন চাইলেই অঢেল সম্পদের অধিকারী হতে পারে... সেটা কিভাবে?
কারণ তার তো আল্লাহপ্রাপ্তি ঘটে যায়। আর যে আল্লাহকে পেলো, সে তো সব পেলো...