দোয়া কবুলের বিশেষ কয়েকটি মুহূর্ত

দুআ কবূল হওয়ার জন্য ওলী বা মুত্তাকী হওয়া শর্ত নয়, পাপীদের দুআও আল্লাহ কবূল করে থাকেন। অবশ্য আল্লাহ তাআলা খাস বান্দাদের দুআ বেশী কবৃল করে থাকেন। অতএব আমি পাপী বা আমি নগণ্য-এরূপ ধারণার বশবর্তী হয়ে দুআ করা ছেড়ে দেয়া সমীচিন নয়।  হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি, খণ্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ৪৫৬, হাদিস নম্বর: ৩৩৭৩)। উক্ত হাদিস দ্বারা আল্লাহ তাআলা কাছে বেশি করে দোয়া করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। 

আবার কয়েকবার দুআ করে হতাশ হয়ে দুআ করা ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। কেননা মানুষের কল্যাণের জন্যই কখনাে কখনাে দুআ বিলম্বে কবূল হয়। দুআ কখনাে বৃথা যায় না। কখনও এমন হয় যে, মানুষ যা দুআ করে হুবহু তা পায়। কখনও যা চাওয়া হয় তা না দিয়ে তার পরিবর্তে অন্য কোন নেয়ামত প্রদান করা হয় অথবা কোন বিপদকে তার থেকে হঠিয়ে দেয়া হয় বা দোয়ার ওছীলায় তার গােনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয় কিংবা দুনিয়াতে যা চাওয়া কয় তা না দিয়ে পরকালের সঞ্চয় হিসেবে তা রেখে দেয়া হয়। মােটকথা-দুআ কখনাে বৃথা যায় না, তবে তা কবূল হওয়ার প্রক্রিয়া এক নয়। সব সময়ই দুআ করা যায়; তবে এমন কিছু সময় রয়েছে যখন দুআ করলে আল্লাহ তা'আলা বিশেষ ভাবে কবুল করে থাকেন। তাহলেে চলুন জেনে নেই দোয়া কবুলের বিশেষ বিশেষ কয়েকটি মুহূর্ত।

দুআ কবূল হওয়ার উত্তম সময়ঃ

১। ফরয নামাযের পর। 

২। শেষ রাতে।

৩। রমযান মাসের দিবারাত্রির সব সময়, বিশেষভাবে ইফতারের সময়।

৪। কোন নেক কাজ সম্পাদনের পর।

৫। সফরের অবস্থায়। বিশেষ ভাবে যদি আল্লাহর দ্বীনের রাস্তায় সফর হয়।

৬। শবে কদরে।

৭। আরাফার দিনে।

৮। জুমুআর রাতে।

৯। জুমুআর দিন বিশেষ কোন এক মুহূর্তে। অনেকের মতে এ সময়টি জুমুআর দিন আসরের পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়ার মধ্যে রয়েছে।

১০। জুমুআর খুতবা শুরু হওয়া থেকে নামায শেষ হওয়া পর্যন্ত, তবে খুতবা চলাকালীন দুআ করলে মনে মনে করতে হবে অথবা ইমাম খুতবার মধ্যে যে দুআ করবেন তাতে মনে মনে (মুখে কোন প্রকার শব্দ করা ছাড়া) আমীন বলতে হবে।)

দোয়া কবুলের উত্তম সময়
দোয়া কবুল হওয়ার উত্তম সময়
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট কিছু চায় না, আল্লাহ তাআলা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হন।’ (তিরমিজি, খণ্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ৪৫৬, হাদিস নম্বর: ৩৩৭৩)। উক্ত হাদিস দ্বারা আল্লাহ তাআলা কাছে বেশি করে দোয়া করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। 

হাদিসে দোয়া করার ব্যাপারে আরো অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ব্যতীত অন্য কোনো বস্তু তাকদিরের লিখনকে ফেরাতে পারে না এবং নেক আমল ছাড়া অন্য কোনো বস্তু হায়াত বৃদ্ধি করতে পারে না।’ (তিরমিজি, খণ্ড: ৪, পৃষ্ঠা: ৪৪৮, হাদিস নম্বর: ২১৩৯)। তিনি আরও বলেন, " তাকদিরের ফয়সালাকে কেবল দোয়াই পরিবর্তন করতে পারে।" 

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যার জন্য দোয়ার দ্বার খোলা হয়েছে (অর্থাৎ যার দোয়া করার তাওফিক হয়েছে), তার জন্য রহমতের দ্বার খোলা হয়েছে। আল্লাহর কাছে যেসব দোয়া চাওয়া হয়, তন্মধ্যে তাঁর কাছে সর্বাধিক পছন্দীয় হলো আফিয়াত; অর্থাৎ নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের জন্য দোয়া করা।’ (জামে তিরমিজি, খণ্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ৫৫২, হাদিস নম্বর: ৩৫৪৮)।

অর্থাৎ দোয়া করার ক্ষেত্রে কোনো রকম অবহেলা করা বোকামি। সর্বদাই আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করতে হবে। কয়েকবার দুআ করে হতাশ হয়ে দুআ করা ছেড়ে দেয়া উচিত নয়। কেননা মানুষের কল্যাণের জন্যই কখনাে কখনাে দুআ বিলম্বে কবূল হয়। কিন্তু দুআ কখনাে বৃথা যায় না। 

Previous Post Next Post