ফরসেজ কি হালাল নাকি হারাম? forsage is haram

অনেকেই বলে বা মনে করে ফরসেজ টা ম্যাট্রিক্স পদ্ধতিতে কাজ করে। এর কারন হলো এটা ওভার ফ্লো আন্ডার ফ্লো এসব। তারা আবার এটাও বলে যে একজনের নিচে আরেকজন হলেই এমএলএম হয়ে যায়না।


কিন্তু ফরসেজটা প্রকৃতপক্ষে একটা এমএলএম (মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং) পদ্ধতিই। একজনের রেফার আরেকজনের নিচে উপরে চলে যাওয়াতে এটাকে ম্যাট্রিক্স বলা হয়। ইনকামটাও সেম একজনেরটা আরেকজনের কাছে। তাছাড়া এটা ফুল্লি মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং পদ্ধতিতে কাজ করে। এখানে আপনার আপ্লাইন যত উপরে থাকবে তার নিচে যতবেশি জয়েন হবে তার ইনকাম ততো হবে। কিন্তু সবার শেষে যে জয়েন হবে বার তার পরে আর যদি কেও জয়েন না করে তাহলে লাস্ট যে জয়েন হইছে তার ইনকাম শূন্য(০)।


ফরসেজ হালাল নাকি হারাম?

ফরসেজ কি হালাল নাকি হারাম

এক গভেষণায় দেখা যায় মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং পদ্ধতির একটা সাইটে যদি ১০ লাখ মানুষ জয়েন করে তাহলে তাদের মাঝে সবার আগে যে জয়েন করেছে তার ইনকামের ১০ লাখ ভাগের একভাগও সবার শেষের জন পাবেনা। কারন তার পরে আর কেও জয়েন হবেনা। তাই কোনো ইনকামও নাই। (সূত্রঃ ইন্টারনেট)


আর ফরসেজ সাইটটা সম্পূর্ণ অবৈধ্য। বিশেষ করে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন আর মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং পদ্ধতির জন্য। জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: অবৈধভাবে বা আইনভঙ্গ করে কেউ বিতর্কিত মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসা পরিচালনা করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সংসদে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এমএলএম কোম্পানিগুলো পুনরায় যাতে সক্রিয় হয়ে জনগণকে প্রতারিত করতে না পারে সে লক্ষ্যে সরকার তিনটি পৃথক আইন প্রণয়ন করেছে। জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য মন্ত্রী এসব কথা জানান। মন্ত্রী জানান, এমএলএম ব্যবসা কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে সরকার মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ এবং মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০১৪ ও সংশোধিত বিধিমালা, ২০১৪ প্রণয়ণ করেছে। তিনি জানান, এমএলএম আইন, ২০১৩ অনুসারে আইন অমান্য করে এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা পরিচালনার জন্য অনূর্ধ্ব ১০ বছর এবং অনূন্য ৫ বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।


এছাড়া অবৈধভাবে বা আইনভঙ্গ করে কেউ এমএলএম ব্যবসা পরিচালনা করলে উক্ত আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। (সূত্রঃ Bangla News 24, প্রথম আলো, যুগান্তর, কালের কণ্ঠ, The Daily Star)


এবার আসি ইসলাম ফরসেজ সম্পর্কে কি বলে? বা মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং সম্পর্কে কি বলে? এটার ইনকাম হারাম নাকি হালাল?


বর্তমান বাংলাদেশের মানুষের ইনটেনশন এমন হয়ে গেছে যে, যেখান থেকে টাকা আসবে সেটাই হালাল। ফরসেজ ব্যবহারকারী অনেকেই বলে এটা হালাল। বা তারা না জেনেই এমন কথা বলে। বা যারা ফরসেজে ভালো পজিশনে আছে তারা নিজের মতো নিজের ফতোয়া দেয় যে এটা হারাম না হালালও না। এটা মাকরূহ। আবার এটাও বলে যে, যারা বলবে ফরসেজ হারাম তারা নাস্তিক (নাউজুবিল্লাহ)।


এ সম্পর্কে অনলাইনে প্রচুর ফতোয়া পাবেন। যেখানে একে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যেমনঃ এখানে নিচে একটি লিংক দিয়ে দেওযা হবে সেখানে জেনে নিতে পারবেন। তাছাড়া আপনি আপনার স্থানীয় একজন আলেমের সাথে কথা বলে নিবেন। 


যাইহোক এসব নিজের মতো করে কখনো বলবেন না। দুঃখ জনক হলেও সত্য যে, এক শ্রেণীর সরলমনা দ্বীনদার ভাইয়েরাও এ ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম না জানার কারণে এবং অর্থলোভের বশবতী হয়ে এই সাইট গুলোতে যোগ দিচ্ছেন।


মুসলিম উম্মার নিকট গ্রহণযোগ্য কোন আলেম এই ব্যবসাকে জায়েয বলে ফতোওয়া দেন নি; বরং প্রথম সারির নির্ভরযোগ্য প্রায় সকল আলেমের কাছেই এসব কোম্পানীর কার্যক্রম বহুবার পেশ করা হয়েছে। তারা সকলেই এক বাক্যে এই সকল কোম্পানীতে যোগ দেয়াকে হারাম বলে ঘোষণা করেছেন এবং মুসলমানদেরকে এদের প্রতারণার জালে প্রবেশ করা হতে সাবধান করেছেন।



তথ্যসূত্রঃ 

১. আই ফতোয়া/ প্রশ্নঃ ফরসেজ কি হালাল? বিস্তারিত দেখুনঃ আই ফতোয়া

Previous Post Next Post