ঈদুল আযহার নামাজ : ঈদের নামাযের নিয়মকানুন

ঈদের নামাজ

ঈদ মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। মুসলমানরা এই দিনটি দারুণ আনন্দে উদযাপন করে। এর প্রবর্তন ঘটে মদীনায়। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনাবাসীদের বছরে দুটি দিন উৎসব করতে দেখেন। জিজ্ঞেস করেন, এই দিনদুটিতে উৎসবের কারণ কী? সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু আনহুম জানালেন, জাহেলী যুগে তারা দিনদুটিতে উৎসব করতেন। তার‌ই ধারাবাহিকতায় এই আনন্দ উদযাপন। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে উৎসবের জন্য এরচেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন। একটি হলো, কুরবানীর দিন। অন্যটি হলো, ফিতর (রোজা ভাঙ্গার) দিন। (আবু দাউদ)


আগামী ২১ জুলাই ১০ জিলহজ অনুষ্ঠিত হবে ত্যাগ ও উৎসর্গের ঈদ ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। ঈদের নামাজ দুই রাকাত। যা আদায় করা ওয়াজিব এবং তা জামাআতে আদায় করতে হয়।


অন্যান্য নামাজ থেকে আলাদা বলে তা আদায় করতে গিয়ে সংশয়ে পড়ে যাই। কোন তাকবিরের সাথে হাত তুলবো কোনটার সঙ্গে তুলবো না ভেবে হয়রান হই। তাই আসুন জেনে নেই ঈদের নামাজের নিয়ম। দুই ঈদের নামাজ একই নিয়মে পড়তে হয়।


ঈদের দুই রাকাত নামাজে অতিরিক্ত ছয় তাকবির দিতে হয়।


প্রথম রাকাতঃ আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ ছয় তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামে পিছনে আদায় করছি বলে নিয়ত বাঁধতে হয়। প্রথমেই- তাকবিরে তাহরিমা- ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত বাঁধবেন। ইমাম ও মুসল্লিরা নিয়ত বাঁধার পর ছানা অর্থাৎ এ দোয়াটি পড়বে-


উচ্চারণ- সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুক।


তারপর ইমামের উচ্চস্বরে তাকবির বলার সঙ্গে সঙ্গে মুসল্লিরাও তাকবির বলবেন। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবির বলার সময় উভয় হাত কান বরাবর ওঠিয়ে ছেড়ে দিবেন। তৃতীয় তাকবিরের সময় উভয় হাত কান বরাবর ওঠিয়ে না ছেড়ে হাত বাঁধবেন।


এরপর ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা এবং অন্য সুরা মিলিয়ে রুকু, সিজদা করবেন; মুসল্লিরাও ইমামের সঙ্গ রুকু সিজদা করবেন।


দ্বিতীয় রাকাতঃ ইমাম সাহেব দ্বিতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা মিলানোর পর রুকুতে যাওয়ার পূর্বে অতিরিক্ত তিন তাকবির প্রথম রাকাতের মতোই আদায় করবেন। অতপর রুকু-সিজদা করার পর অন্যান্য নামাজের মতোই সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করবেন।


এ নিয়মে ঈদুল ফিতরও আদায় করা হয়। উভয় ঈদের আগে পরে কোনো নফল বা সুন্নত নামাজ নেই। এমনকি ঈদের নামাজের জন্য কোনো আজান ও ইকামাতেরও প্রয়োজন হয় না।

Previous Post Next Post